স্বদেশ ডেস্ক:
বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফর মানে একটা বিভীষিকা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর তো এটা আরও মারাত্মক হয়ে উঠেছে। এমনিতে দেশটির কন্ডিশন খুব জটিল। তার ওপর সেখানে বেশ কয়েকটি সিরিজ খেললেও এখনো কোনো জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। সবকিছু বিবেচনায় একটু কঠিন এই দেশটিতে খেলতে গিয়ে নতুন জটিলতার সম্মুখীন হয়েছে টাইগাররা। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে সিরিজ বাতিল করে দেশে ফিরতে পারলে শান্তি পেতেন অনেকেই।
বাংলাদেশ দল যে বিমানে করে নিউজিল্যান্ডে পৌঁছায়। সেই বিমানের এক যাত্রীর দেহে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন পাওয়া গেছে, যা দেশটিতে প্রথমবার শনাক্ত হয়। একই সঙ্গে শ্রীলঙ্কা থেকে দলে যোগ দেওয়া স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথও করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এতে করে সাত দিনের কোয়ারেন্টিন করার কথা থাকলেও তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দিনে। আর ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে ট্রাভেল করায় ঝুঁকিপূর্ণ ৯জনকে রাখা হয়েছে আলাদা কোয়ারেন্টিনে।
গত ৮ ডিসেম্বর নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করে মুমিনুল হকরা। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন আলোচনা করে নামিয়ে আনা হয় সাত দিনে। সবকিছু ঠিকই ছিল। ১৬ তারিখে অনুশীলনের জন্য হোটেল থেকে মাঠেও গিয়েছিল দল। কিন্তু একদিন পরই নতুন সিদ্ধান্ত জানায় নিউজিল্যান্ড সরকার। সবাইকে আবারও কোয়ারেন্টিনে রেখে তৃতীয় পরীক্ষা পর্যন্ত অপেক্ষা নির্দেশ দিয়েছে তারা। আগামী ২০ ডিসেম্বর সেই পরীক্ষায় নেগেটিভ এলেই ছাড়া পাবেন ক্রিকেটাররা। না হয়, বাড়তে পারে কোয়ারেন্টিন সমস্যা।
নিউজিল্যান্ডে গিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশে থাকা এই দুটি ম্যাচ বাতিলেরও পথ পাচ্ছে না বোর্ড। পরিস্থিতি বুঝে আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত। তবে খেলোয়াড়রা যে মানসিকভাবে খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সেটা অনুধাবন করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়রা খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ওরা টানা কোয়ারেন্টিনে আছে। সূচি অনুযায়ী যেদিন আসার কথা সেদিন আসলেও, তার ৪-৫ দিন পর বিপিএলের জন্য জৈব সুরক্ষা বলয়ে ঢুকতে হতো।’
‘আমরা চাচ্ছিলাম ২০ জানুয়ারি থেকে বিপিএল শুরু করব। ফ্র্যাঞ্চাইজিরা চাচ্ছে বায়োবাবলে থেকে ওদের কোচিং স্টাফের অধীনে অনুশীলন করবে। যেদিন বিপিএল শেষ হওয়ার কথা সেদিন আবার আফগানিস্তান আসবে বাংলাদেশে। মানে আবার বায়োবাবল। এই সিরিজ শেষ করার ৪-৫ দিন পরই উড়াল দিতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এই জিনিস ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা চলবে। কোনো বিরতিই দেওয়া যাচ্ছে না। মানসিক ও শারীরিকভাবে তারা একেবারেই ক্লান্ত’, যোগ করেন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির পর অনেক ক্রিকেটারাই দেশে ফিরে আসার কথা জানান। কিন্তু সিরিজের মাঝ পথে এমন সুযোগ দেখছে না বোর্ড। একই সঙ্গে ট্রাভেলেও বিষয় আছে। তবুও কোনো রাস্তা পেলে তা অবশ্যই বের করবে বিসিবি। পাপন বলেন, ‘অনেক খেলোয়াড় চিন্তা করছিল চলে আসা যায় কি না, সিরিজ বাদ দেওয়া যায় কি না। আসলে এটার কোনো সুযোগ নেই। যদি ২১ তারিখের পর আবার কোয়ারেন্টিন আবার বাড়ানো হয়, তখন ওদের সাথে আলোচনায় যেতে পারে।’